সারাদিন
এ পথে ও পথে এ পাড়ায় ও পাড়ায় ঘুরে ঘুরে দানাপানির জোগাড় করতে করতে রাত হয়।
পথের পাশে কুপি জ্বেলে বসে থাকে সবজিওয়ালারা, ফুল আর মালার পসরা সাজিয়ে
রাতের পসারিনী, হাইওয়ে দিয়ে সারি সারি মালভর্তি ট্রাক কোথায় যেন যায়
সারারাত ধরে। মনে হয়, রাত হল, ঘরে যাই।
ভাবি, কোথায় আমার সেই ঘর? কোথাও তো নেই। আকৈশোর ঘরছাড়া, ভবঘুরেগিরি করেই জীবন কাটল। কতো জায়গায় যে থেকেছি, কতো জায়গায় যে ঘুমিয়েছি মঠে, মন্দিরে, আশ্রমে, পথে, গৃহস্থের ঘরে, খোলা ছাদে কোথায় নয়। তার পরেও যেখানে যখন রাতে ফিরি তখন সেই জায়গাকেই ঘর মনে হয়। কিন্তু তাকে ঘর কি আর বলা চলে?
রাস্তা দিয়ে ফিরতে ফিরতে দেখি কোনো এক বাড়ির আলো ঝলমলে জানালা, খাওয়ার টেবিলে এসে বসেছে সে বাড়ির মানুষজন। স্বামী, স্ত্রী, ছেলে, মেয়ে, ছেলের বৌ। হৈ হৈ ব্যাপার। তারা রাতের খাবার খেতে খেতে গল্প করছে, হাসছে, মজা করছে। দূর থেকে দেখতে বেশ লাগে তাদের এই সুখের পৃথিবীর খণ্ড মুহূর্ত। ভাবি, যদি এই সুখ চিরস্থায়ী হত!
ওই পুরুষটি তার স্ত্রীকে ঘিরে যে স্বপ্ন দেখেছিল, তা কি মিলে গেছে পুরোপুরি? সবটা নয়। স্ত্রী যে স্বপ্ন দেখেছিল তার স্বামীকে নিয়ে, কিংবা মা-বাবা যে স্বপ্ন দেখেছে তাদের ছেলেমেয়েদের নিয়ে, তার ছিটেফোঁটাও কি মিলবে বাস্তবের সঙ্গে? অল্প একটু মিলবে, বাকি অনেকটাই অধরা থেকে যাবে। মানুষের স্বপ্ন বড় ব্যক্তিগত, বাস্তবের সঙ্গে সেই স্বপ্নের সচরাচর দেখা হয় না। সারা জীবন পাশাপাশি থেকেও দুজন মানুষ একে অপরের কাছে অচেনা থেকে যায়। যে এই কথার বিরোধিতা করে, সে হয় মিথ্যাবাদী, নয় মোহগ্রস্ত। সকলেই সকলের কাছে শেষাবধি অচেনা।
অচেনা, অপরিচিত মানুষ সব...কেউ স্বামী-স্ত্রী, কেউ সন্তানসন্ততি সেজে ডাইনিং টেবিলে কয়েক মুহূর্তের জন্য খেতে বসেছে, আনন্দ করছে, হাসছে। কেউ কারুর নয়, তবুও। এখানে আচমকাই সব দেখা, কিছুদিন একসাথে থাকা, তারপর চলে যাওয়া যে যার পথে। এই একসঙ্গে থাকাটার নামই ঘর? 'ঘর' শব্দটির মধ্যে এই অভিপ্রায় তো ছিল না। নিশ্চিন্ত, পরম, অচ্ছেদ্য ভালবাসার নীড়কেই তো আশা করেছে মানুষ 'ঘর' শব্দটি উচ্চারণের সঙ্গে সঙ্গে। কিন্তু এ কেমন ঘর? একদল অপরিচিত মানুষের সঙ্গে একজীবন থাকাথাকি, এই-ই ঘর? আর তা ছাড়া সত্যিকারের ঘর কোথায় এই পৃথিবীতে, যেখানে ব্যক্তিমানুষের স্বপ্ন সাকার হয়ে বিরাজ করে? দেয় চিরস্থায়িত্বের নিশ্চিন্ত আশ্বাস?
ভাল লাগছে না তো? ভাল লাগবেই বা কেন? অপ্রিয় সত্য কার ভাল লাগে, বলুন? থাক ওসব কথা। চলুন, দেড়শো বছর আগের একটা গল্প বলি।
এ শহরেরই উত্তর প্রান্তে গঙ্গাঘেঁষা কোনো এক অঞ্চলে জন্মেছিলেন এক অন্যরকম মানুষ। নাম তাঁর হরিনাথ। যুবাবয়সে অত্যন্ত বলিষ্ঠ ছিলেন তিনি। এক হাজার বুকডন দিতে পারতেন। সাঁতরে গঙ্গা এপার ওপার করা তাঁর কাছে ছেলেখেলা ছিল। শৈশবেই পিতৃমাতৃহীন। দাদা-বৌদির কাছে মানুষ। ব্রাহ্মণ যুবক। গম্ভীর প্রকৃতির। একবেলা স্বপাক হবিষ্যান্ন আহার করতেন। সংস্কৃত ভাষায় অসামান্য অধিকার। বেদান্তশাস্ত্রের পঠনপাঠনে অতিশয় মনোযোগ ছিল হরিনাথের।
তারপর বহুদিন কেটে গেছে। দক্ষিণেশ্বরের এক সাধুর কাছে যাতায়াত ছিল। তাঁর কাছ থেকেই ধর্মজীবনের দিশা পেয়েছিলেন। পেয়েছিলেন ত্যাগ ও প্রেমের অনুপম আদর্শ, শাস্ত্রে যার আভাসটুকু মাত্র আছে।
গুরুদেবের মহাসমাধির পর ত্যাগব্রতী গুরুভ্রাতারা একসঙ্গে থাকতে শুরু করেছিলেন বরানগরের একটা জীর্ণ বাড়িতে। সকলেই প্রায় যুবক। নরেন, রাখাল, তারক, শশী, হরিনাথ, নিরঞ্জন...। সেই তাঁদের প্রথম মঠ। যথাসময়ে সন্ন্যাস নিলেন তাঁরা। হরিনাথ হলেন তুরীয়ানন্দ।
কয়েক মাস থাকবার পর হরিনাথের এই মঠে আটকে থাকা ভাল লাগল না। একদিন কাউকে কিছু না বলে বেরিয়ে পড়লেন পথে। মাঝে মাঝে বরানগরে খবর আসত তাঁর। তারপর আর কোনো খবর নেই। বরানগরের সাধুভাইয়েরা-- তাঁরাও একে একে বেরিয়ে পড়লেন অনিকেত যাত্রায়। কেউ কারুর খবর পেতেন না আর। কখনও এর ওর সঙ্গে দেখা হয়ে যেত পথের বাঁকে। কিন্তু হরিনাথের খবর খুব কমজনই পেতেন। অনেকে ধরে নিলেন, হরিনাথ মারা গেছেন।
হরিনাথ কিন্তু তখন গঙ্গোত্রীতে। একা। দুটি বহির্বাস, কম্বল একটা, একটি কমণ্ডলু, কটা বই। আর কিছু নেই। ঘুরতে ঘুরতে এ বিজন স্থানে এসে পড়েছেন। একটি পরিত্যক্ত গুহা পাওয়া গেল। এখানেই থাকতে শুরু করলেন। অনেক নীচে একটা ছত্র আছে। সপ্তাহে দুদিন সেখান থেকে ভিক্ষা করে নিয়ে আসেন। তাতেই চলে যায়। দিনের বেশিরভাগ সময় ধ্যানধারণা ও শাস্ত্রাধ্যয়নে ডুবে থাকেন। এইভাবে জীবনের কতো কতো নিমগ্ন বছর চলে গেল।
একটু রাত হলে গঙ্গার ধারে এসে বসেন। কনকনে হাড়হিম ঠান্ডা। ঘোর অন্ধকার রাত্রি, নিঃশব্দ চরাচর, শুধু গঙ্গার নিরবধি স্রোতোধ্বনি। সেই নীরব নিশীথের প্রহর জুড়ে হরিনাথ অন্তর্বহিঃশূন্য অনুভবে মগ্ন হয়ে থাকেন। কখনও কখনও ধ্যান ছেড়ে নিশ্চুপে অন্ধকারে উদাস হয়ে বসে থাকেন। প্রহরের পর প্রহর কেটে যায়।
রাত গাঢ়তর হলে ধীরে ধীরে গুহায় ফিরে আসেন হরিনাথ।
এক রাত্রে এরকম গঙ্গাতীরে বসে থাকতে থাকতে মনে হল, বড্ড শীত লাগছে। গুহায় ফিরে যাবেন। অন্যমনস্কভাবে নিজেকেই বলে উঠলেন, রাত হল। ঘরে চলো।
অমনই সম্বিত ফিরে এল। এ আমি কী বললাম? ঘরে চলো? ঘর? আমার আবার ঘর কোথায়? কোন সুদূর কৈশোরে ঘর ছেড়েছি...এখন আবার ঘর? এখনও ঘর? হায় হায়! এখনও আমার গৃহসংস্কার রয়ে গেছে?
ভয়ানক আত্মক্ষোভ হল তাঁর। দ্রুতপদে গুহাতে ফিরে ধ্যানে বসলেন। অবিরত বিচার, ধ্যান, তপশ্চর্যায় নিরত থেকে ছয় মাসের চেষ্টায় মনের অবচেতনা থেকে ঘর, ঘরের স্বপ্ন, ঘরের ধারণা, ঘরের স্মৃতিকে ঘষে ঘষে মুছে তুলে দিলেন। ছয়মাস পর একদিন সানন্দে বলে উঠলেন, নাহ, আমার মনে আর ঘর নেই। আমি যথার্থই অনিকেত হয়েছি!
এই জীবন আসলে একটা সেতু। সেতুর উপরে কেউ ঘর বানায়? সেতু বেয়ে পার হয়ে চলে যেতে হয় শুধু। আর কিছু নয়।
লেখক: সন্মাত্রানন্দ
ভাবি, কোথায় আমার সেই ঘর? কোথাও তো নেই। আকৈশোর ঘরছাড়া, ভবঘুরেগিরি করেই জীবন কাটল। কতো জায়গায় যে থেকেছি, কতো জায়গায় যে ঘুমিয়েছি মঠে, মন্দিরে, আশ্রমে, পথে, গৃহস্থের ঘরে, খোলা ছাদে কোথায় নয়। তার পরেও যেখানে যখন রাতে ফিরি তখন সেই জায়গাকেই ঘর মনে হয়। কিন্তু তাকে ঘর কি আর বলা চলে?
রাস্তা দিয়ে ফিরতে ফিরতে দেখি কোনো এক বাড়ির আলো ঝলমলে জানালা, খাওয়ার টেবিলে এসে বসেছে সে বাড়ির মানুষজন। স্বামী, স্ত্রী, ছেলে, মেয়ে, ছেলের বৌ। হৈ হৈ ব্যাপার। তারা রাতের খাবার খেতে খেতে গল্প করছে, হাসছে, মজা করছে। দূর থেকে দেখতে বেশ লাগে তাদের এই সুখের পৃথিবীর খণ্ড মুহূর্ত। ভাবি, যদি এই সুখ চিরস্থায়ী হত!
ওই পুরুষটি তার স্ত্রীকে ঘিরে যে স্বপ্ন দেখেছিল, তা কি মিলে গেছে পুরোপুরি? সবটা নয়। স্ত্রী যে স্বপ্ন দেখেছিল তার স্বামীকে নিয়ে, কিংবা মা-বাবা যে স্বপ্ন দেখেছে তাদের ছেলেমেয়েদের নিয়ে, তার ছিটেফোঁটাও কি মিলবে বাস্তবের সঙ্গে? অল্প একটু মিলবে, বাকি অনেকটাই অধরা থেকে যাবে। মানুষের স্বপ্ন বড় ব্যক্তিগত, বাস্তবের সঙ্গে সেই স্বপ্নের সচরাচর দেখা হয় না। সারা জীবন পাশাপাশি থেকেও দুজন মানুষ একে অপরের কাছে অচেনা থেকে যায়। যে এই কথার বিরোধিতা করে, সে হয় মিথ্যাবাদী, নয় মোহগ্রস্ত। সকলেই সকলের কাছে শেষাবধি অচেনা।
অচেনা, অপরিচিত মানুষ সব...কেউ স্বামী-স্ত্রী, কেউ সন্তানসন্ততি সেজে ডাইনিং টেবিলে কয়েক মুহূর্তের জন্য খেতে বসেছে, আনন্দ করছে, হাসছে। কেউ কারুর নয়, তবুও। এখানে আচমকাই সব দেখা, কিছুদিন একসাথে থাকা, তারপর চলে যাওয়া যে যার পথে। এই একসঙ্গে থাকাটার নামই ঘর? 'ঘর' শব্দটির মধ্যে এই অভিপ্রায় তো ছিল না। নিশ্চিন্ত, পরম, অচ্ছেদ্য ভালবাসার নীড়কেই তো আশা করেছে মানুষ 'ঘর' শব্দটি উচ্চারণের সঙ্গে সঙ্গে। কিন্তু এ কেমন ঘর? একদল অপরিচিত মানুষের সঙ্গে একজীবন থাকাথাকি, এই-ই ঘর? আর তা ছাড়া সত্যিকারের ঘর কোথায় এই পৃথিবীতে, যেখানে ব্যক্তিমানুষের স্বপ্ন সাকার হয়ে বিরাজ করে? দেয় চিরস্থায়িত্বের নিশ্চিন্ত আশ্বাস?
ভাল লাগছে না তো? ভাল লাগবেই বা কেন? অপ্রিয় সত্য কার ভাল লাগে, বলুন? থাক ওসব কথা। চলুন, দেড়শো বছর আগের একটা গল্প বলি।
এ শহরেরই উত্তর প্রান্তে গঙ্গাঘেঁষা কোনো এক অঞ্চলে জন্মেছিলেন এক অন্যরকম মানুষ। নাম তাঁর হরিনাথ। যুবাবয়সে অত্যন্ত বলিষ্ঠ ছিলেন তিনি। এক হাজার বুকডন দিতে পারতেন। সাঁতরে গঙ্গা এপার ওপার করা তাঁর কাছে ছেলেখেলা ছিল। শৈশবেই পিতৃমাতৃহীন। দাদা-বৌদির কাছে মানুষ। ব্রাহ্মণ যুবক। গম্ভীর প্রকৃতির। একবেলা স্বপাক হবিষ্যান্ন আহার করতেন। সংস্কৃত ভাষায় অসামান্য অধিকার। বেদান্তশাস্ত্রের পঠনপাঠনে অতিশয় মনোযোগ ছিল হরিনাথের।
তারপর বহুদিন কেটে গেছে। দক্ষিণেশ্বরের এক সাধুর কাছে যাতায়াত ছিল। তাঁর কাছ থেকেই ধর্মজীবনের দিশা পেয়েছিলেন। পেয়েছিলেন ত্যাগ ও প্রেমের অনুপম আদর্শ, শাস্ত্রে যার আভাসটুকু মাত্র আছে।
গুরুদেবের মহাসমাধির পর ত্যাগব্রতী গুরুভ্রাতারা একসঙ্গে থাকতে শুরু করেছিলেন বরানগরের একটা জীর্ণ বাড়িতে। সকলেই প্রায় যুবক। নরেন, রাখাল, তারক, শশী, হরিনাথ, নিরঞ্জন...। সেই তাঁদের প্রথম মঠ। যথাসময়ে সন্ন্যাস নিলেন তাঁরা। হরিনাথ হলেন তুরীয়ানন্দ।
কয়েক মাস থাকবার পর হরিনাথের এই মঠে আটকে থাকা ভাল লাগল না। একদিন কাউকে কিছু না বলে বেরিয়ে পড়লেন পথে। মাঝে মাঝে বরানগরে খবর আসত তাঁর। তারপর আর কোনো খবর নেই। বরানগরের সাধুভাইয়েরা-- তাঁরাও একে একে বেরিয়ে পড়লেন অনিকেত যাত্রায়। কেউ কারুর খবর পেতেন না আর। কখনও এর ওর সঙ্গে দেখা হয়ে যেত পথের বাঁকে। কিন্তু হরিনাথের খবর খুব কমজনই পেতেন। অনেকে ধরে নিলেন, হরিনাথ মারা গেছেন।
হরিনাথ কিন্তু তখন গঙ্গোত্রীতে। একা। দুটি বহির্বাস, কম্বল একটা, একটি কমণ্ডলু, কটা বই। আর কিছু নেই। ঘুরতে ঘুরতে এ বিজন স্থানে এসে পড়েছেন। একটি পরিত্যক্ত গুহা পাওয়া গেল। এখানেই থাকতে শুরু করলেন। অনেক নীচে একটা ছত্র আছে। সপ্তাহে দুদিন সেখান থেকে ভিক্ষা করে নিয়ে আসেন। তাতেই চলে যায়। দিনের বেশিরভাগ সময় ধ্যানধারণা ও শাস্ত্রাধ্যয়নে ডুবে থাকেন। এইভাবে জীবনের কতো কতো নিমগ্ন বছর চলে গেল।
একটু রাত হলে গঙ্গার ধারে এসে বসেন। কনকনে হাড়হিম ঠান্ডা। ঘোর অন্ধকার রাত্রি, নিঃশব্দ চরাচর, শুধু গঙ্গার নিরবধি স্রোতোধ্বনি। সেই নীরব নিশীথের প্রহর জুড়ে হরিনাথ অন্তর্বহিঃশূন্য অনুভবে মগ্ন হয়ে থাকেন। কখনও কখনও ধ্যান ছেড়ে নিশ্চুপে অন্ধকারে উদাস হয়ে বসে থাকেন। প্রহরের পর প্রহর কেটে যায়।
রাত গাঢ়তর হলে ধীরে ধীরে গুহায় ফিরে আসেন হরিনাথ।
এক রাত্রে এরকম গঙ্গাতীরে বসে থাকতে থাকতে মনে হল, বড্ড শীত লাগছে। গুহায় ফিরে যাবেন। অন্যমনস্কভাবে নিজেকেই বলে উঠলেন, রাত হল। ঘরে চলো।
অমনই সম্বিত ফিরে এল। এ আমি কী বললাম? ঘরে চলো? ঘর? আমার আবার ঘর কোথায়? কোন সুদূর কৈশোরে ঘর ছেড়েছি...এখন আবার ঘর? এখনও ঘর? হায় হায়! এখনও আমার গৃহসংস্কার রয়ে গেছে?
ভয়ানক আত্মক্ষোভ হল তাঁর। দ্রুতপদে গুহাতে ফিরে ধ্যানে বসলেন। অবিরত বিচার, ধ্যান, তপশ্চর্যায় নিরত থেকে ছয় মাসের চেষ্টায় মনের অবচেতনা থেকে ঘর, ঘরের স্বপ্ন, ঘরের ধারণা, ঘরের স্মৃতিকে ঘষে ঘষে মুছে তুলে দিলেন। ছয়মাস পর একদিন সানন্দে বলে উঠলেন, নাহ, আমার মনে আর ঘর নেই। আমি যথার্থই অনিকেত হয়েছি!
এই জীবন আসলে একটা সেতু। সেতুর উপরে কেউ ঘর বানায়? সেতু বেয়ে পার হয়ে চলে যেতে হয় শুধু। আর কিছু নয়।
লেখক: সন্মাত্রানন্দ
No comments:
Post a Comment