Showing posts with label প্রবন্ধ. Show all posts
Showing posts with label প্রবন্ধ. Show all posts

Sunday, June 25, 2017

নজরুল যা পেরেছিলেন


একাধারে বামুন-মোল্লাকে বিদ্রূপ করতে পেরেছেন, ঈশ্বরের কাছে যাবার জন্য কোনো মধ্যবর্তীর প্রয়োজন নেই বলতে পেরেছিলেন সোচ্চারে। ধর্ম যেখানে ধর্মধ্বজীদের হাতে মানবতার শত্রু হয়, তাকে কলমের আগায় বিঁধতে ভয় পাননি।
"পূজিছে গ্রন্থ ভণ্ডের দল মূর্খরা সব শোন
মানুষ এনেছে গ্রন্থ, গ্রন্থ আনেনি মানুষ কোন।"

আবার শ্যামা হিন্দুর মা বলে গান লিখতে আটকায়নি তাঁর। ইসলামী সঙ্গীতে ঢেলে দিয়েছেন নিজের সুর-সাধনা। ধর্মের যে ভাব মানবিক তাকে আপন করতে দ্বিধা বোধ করেননি। আশ্চর্য যৌবনে মেতে ছিলেন নজরুল। আশ্চর্য ভাবে মেতেছিলেন।
শ্যামাসঙ্গীত লিখছেন বলে শুধু আত্ম-উদ্ধারের বাসনা ব্যক্ত করেননি।
"আর কতকাল রইবি বেটি, মাটির ঢেলার মূর্তি-আড়াল?
স্বর্গকে আজ জয় করেছে অত্যাচারী শক্তি চাঁড়াল।
দেব-শিশুদের মারছে চাবুক, বীর যুবাদের দিচ্ছে ফাঁসি-
ভূ-ভারত আজ কসাইখানা, আসবি কখন সর্বনাশী?”

বুকের পাটা অনেক বড়। মন বলেছে মা-কে ডাকবেন। দুঃসময়ে সেই অপরূপা শক্তি যদি ভক্তির কথা শুনে প্রলয় নাচনে না আসে, তবে তার কোলের সন্তানের কি হবে? সে শক্তি বাহুতে বাহুতে প্রলয়ের হাওয়া লাগালে তবে সাগরপার করা যাবে অত্যাচারীকে। এবং তিনি আল্লাকেও দাঁড় করিয়েছেন আল্লার নাম নেওয়া জাত-জালেমদের বিরুদ্ধে।
"সিঁড়ি-ওয়ালাদের দুয়ারে এসেছে আজ
চাষা মজুর ও বিড়িওয়ালা;
মোদের হিস্‌সা আদায় করিতে ঈদে
দিল হুকুম আল্লাতালা!
দ্বার খোলো সাততলা-বাড়িওয়ালা, দেখো কারা দান চাহে,
মোদের প্রাপ্য নাহি দিলে যেতে নাহি দেব ঈদ্গাহে!
আনিয়াছে নবযুগের বারতা নতুন ঈদের চাঁদ,
শুনেছি খোদার হুকুম, ভাঙিয়া গিয়াছে ভয়ের বাঁধ।
মৃত্যু মোদের ইমাম সারথি, নাই মরণের ভয়;
মৃত্যুর সাথে দোস্তি হয়েছে – অভিনব পরিচয়।
যে ইসরাফিল প্রলয়-শিঙ্গা বাজাবেন কেয়ামতে–
তাঁরই ললাটের চাঁদ আসিয়াছে, আলো দেখাইতে পথে।
মৃত্যু মোদের অগ্রনায়ক, এসেছে নতুন ঈদ,
ফিরদৌসের দরজা খুলিব আমরা হয়ে শহিদ।
আমাদের ঘিরে চলে বাংলার সেনারা নৌজোয়ান,
জানি না, তাহারা হিন্দু কি ক্রিশ্চান কি মুসলমান।
নির্যাতিতের জাতি নাই, জানি মোরা মজলুম ভাই –
জুলুমের জিন্দানে জনগণে আজাদ করিতে চাই!
এক আল্লার সৃষ্ট সবাই, এক সেই বিচারক,
তাঁর সে লীলার বিচার করিবে কোন ধার্মিক বক?
বকিতে দিব না বকাসুরে আর, ঠাসিয়া ধরিব টুঁটি
এই ভেদ-জ্ঞানে হারায়েছি মোরা ক্ষুধার অন্ন রুটি।"

ইসলামী সঙ্গীত-এর পংক্তি এগুলি। নজরুল কিন্তু নজরুল-ই। খোদার সামনেই বসুন আর শ্যামা মায়ের কোলের কাছে, তিনি বলেন সেই মানুষের কথা, যার কেউ নেই।
নজরুল পেরেছিলেন। আমরা পারিনি।

লেখক:শুদ্ধসত্ত্ব সহজিয়া ঘোষ, নাট্যকার

জয়দেব মুখোপাধ্যায় : চৈতন্য মৃত্যুরহস্যের কিনারা করতে গিয়ে প্রাণ দিয়েছিলেন যে গবেষক

জয়দেব মুখোপাধ্যায়ের যেন এক কিংবদন্তির নাম যার কথা অনেকেই শুনেছে , বহু মানুষই তাকে খুঁজে ফেরে কিন্ত তার ব্যাপারে বিশদে কেউ কিছু বলতে পারেনা...