শারদীয় ঘ্রাণ নুয়ে পড়ে ঘাসে
শরৎ এসে, শারদীয় ঘ্রাণ নুয়ে পড়ে ঘাসে
শাড়ির আঁচল ছুঁয়ে...
মৃত্তিকায় জড়ালে মমতা মাখা মহুয়া আকাশে।
শাঁখের ধ্বনিতে বুঝি, দুঃসহ লড়াই রপ্ত করে
পূর্ণিমা গমনে দেবী...
বাপের ঘরে এলে দুর্গা সাজে ভৈরবী প্রহরে ।
বোধন ভোরের ঝলমলে রোদ ঝাঁপাচ্ছে বেশ
প্রতিমা তোমার মূর্তি...
শিবের জটায় বাঁধবে বেণী রুদ্র কালোকেশ।
কাশেরবনে কলুষ ছায়া, ফর্সা ফুলের আলোয় ঢাকা
কুয়াশা কোমল...
হিমশীত নেমে এসে ধানের পাতায় শিশির জমে থাকা।
কলাবতী বউয়ের পাশে গণেশ ঠাকুর বর
ভিডিও গানের সিডি...
শিউলি ঝরা উঠোন ভরা আছে সন্ধ্যা নদীর চর।
আমাদের গায়ে রঙিন পোষাক, সিল্ক-সালোয়ারি
নতুন সাজের গন্ধ নিয়ে...
আমরা যাচ্ছি পুজো মন্দিরে -পুরনো কালিবাড়ি।
আমরা বেড়াচ্ছি রাত জেগে মণ্ডপ ঘুরে ঘুরে
ঢাকের-উল্লাসে...
আকাশে বিদ্যুৎ ঝলকায়-পেঁচাপাখি যায় উড়ে।
লাইটিং-এ রাত জ্বলজ্বলে ডিজিটাল জোনাকিরা
অসুর বুকে ধনুক ছুড়ে...
ধুপের তাওয়ায় তপ্ত আরতি নাচছে শাকিরা।
আঁধার কাটবে, ঝুমকা জবায় পাপড়ি ঝিরিঝিরি
মহিষ তাড়াতে...
সিংহের লড়াই শুরু তবু সাইবারে গেম বিচ্ছিরি।
জায়া লক্ষ্মী-সরস্বতী বোন, মোহিনী বীণায় বাজে
ভাদুই মাল্লারে গায়...
মা তোর জঠরে আশ্রয় খুঁজে পাওয়া এসরাজে।
আমরা অতসী, আমরা খুশির উত্তেজনায়
অপরাজিতা অঞ্জলি তো, মায়ের মুখেই মানায়...
বেসিনের সিরামিকে সাদা পাণ্ডুলিপি
হেসে হেসে ট্যাপকলের জল ঝরে
বেসিনের সিরামিকে সাদা পাণ্ডুলিপি ভিজিয়ে ফেললে;
কামিজের ছিটেফোটা বিবর্ণতা-
মুছে ফেলা যায়...
বিমূঢ়তা আগোচরে থাকে ;
দীর্ঘশ্বাসে বুকের মাছিরা গুনগুনিয়ে ডাকলে
জিয়নকাঠির ছোঁয়ায় মুচড়ে ওঠে হৃদয়ের মূর্তি
হাতেগড়া প্রতিমাও প্রার্থনায় নতমুখ
কৌতূহলে-ক্ষমার অযোগ্য পাপ বলে-
খুলে বললে সবই...
পদ্ম-গোক্ষুর সাপের কামড়ে
ভ্রমরের বিষ পর্যন্ত নামিয়েছিলে পুকুরের জলে...
ইস্পাতের আয়ু
দুধ রান্নায় হলুদ রঙের ডেকচি ভরে ওঠে
গ্রিলে মরচে ধরার রহস্য দেখেই-
বোঝা যায় ইস্পাতের আয়ু।
গল্পে না হয়; ঘটনা সাজানো নিসর্গ !
সূর্যাস্তের মিঁউমিঁউ আলো
বসন্ত...নিশ্বাস নিতে আসে...
টিভি মেরামতের তুখোড় মিস্ত্রীদের
মশানিধন কাজর প্রযুুক্তি প্রয়োজন;
কর্পোরেশন কর্মীদের বাড়তি চাপ নেই
নগর জায়গা ঘিরে ধরে
কিছু ট্যাক্স বিলের বাড়তি প্রশাখা নুইয়ে
পড়ে আছে-
যেখানে ঝরছে আবর্জনার স্তুপ-পালক পুচ্ছ !
মশারি-চাঁদর বিছানায় নরম তোষক...
মাইক্রোওয়েভ রান্নাঘর
ডোবা থেকে তুললে সে মাটিতে লুকানো
থাকে ফুলের সুবাস...
আঙিনায় ঘাসের উর্বরা নিয়ে
বেশ কিছু উদ্ভিদ চর্চার কথা: বেলচা-কোদাল-কাস্তে
ছন্দের নিবিড়ে সামান্য আলো যে নিয়মিত গাছের খাদ্যের
রুটি-তরকারী মাইক্রোওয়েভ রান্না ঘরের উষ্ণতা ফিরে গিয়ে
বিকেল হলেই বাড়ে-কমে !
দরজার মাপেই হয়তো ফনিমনসার গায়ে
এতো তীক্ষ্ম কাঁটা-
ক্ষোভে ক্ষিপ্ত হয়ে আছে।
টবের বাইরে খুব বর্ষাকাল জেনে গুছিয়ে রাখবে
পোষাকের আলমারি ভরা
নেপথোলিনের ঘ্রাণ...
ভেজা পরিচ্ছদ যতটা ছড়াবে
বিকেলের রৌদ্র অতোটা বিপ্লবী নয়,
গাঢ়লাল জবা-পুকুরের জল...
খালের জোয়ারে বয়ে যাচ্ছে রক্তাভ হিজল
জালনার এতো কাছে !
তবু-ফুল দেখি না,
দেখি! রক্তের জোয়ার বয়ে যাচ্ছে
ছটফটে স্রোতে...
যে ঘরের দেয়ালে ক্রুশবিদ্ধ যিশুর মূর্তি
টাঙিয়ে রেখেছি;
আমাদের আলিঙ্গনে ভেজা
পরিচ্ছদ কতোটা শুকাবে প্রার্থনায় জপে ?
মনিকাঞ্চন ফুলের গন্ধ যতটা ছড়াবে
সুপারি গাছের চিরল পাতায় বিছেপোকা সুরসুরে হেঁটে যায়
ভিজে হাওয়া জানলায় এসে
উঁকি দেয়....
রূপকথা...
কবি : জীবনানন্দ গবেষক, বরিশাল।
শরৎ এসে, শারদীয় ঘ্রাণ নুয়ে পড়ে ঘাসে
শাড়ির আঁচল ছুঁয়ে...
মৃত্তিকায় জড়ালে মমতা মাখা মহুয়া আকাশে।
শাঁখের ধ্বনিতে বুঝি, দুঃসহ লড়াই রপ্ত করে
পূর্ণিমা গমনে দেবী...
বাপের ঘরে এলে দুর্গা সাজে ভৈরবী প্রহরে ।
বোধন ভোরের ঝলমলে রোদ ঝাঁপাচ্ছে বেশ
প্রতিমা তোমার মূর্তি...
শিবের জটায় বাঁধবে বেণী রুদ্র কালোকেশ।
কাশেরবনে কলুষ ছায়া, ফর্সা ফুলের আলোয় ঢাকা
কুয়াশা কোমল...
হিমশীত নেমে এসে ধানের পাতায় শিশির জমে থাকা।
কলাবতী বউয়ের পাশে গণেশ ঠাকুর বর
ভিডিও গানের সিডি...
শিউলি ঝরা উঠোন ভরা আছে সন্ধ্যা নদীর চর।
আমাদের গায়ে রঙিন পোষাক, সিল্ক-সালোয়ারি
নতুন সাজের গন্ধ নিয়ে...
আমরা যাচ্ছি পুজো মন্দিরে -পুরনো কালিবাড়ি।
আমরা বেড়াচ্ছি রাত জেগে মণ্ডপ ঘুরে ঘুরে
ঢাকের-উল্লাসে...
আকাশে বিদ্যুৎ ঝলকায়-পেঁচাপাখি যায় উড়ে।
লাইটিং-এ রাত জ্বলজ্বলে ডিজিটাল জোনাকিরা
অসুর বুকে ধনুক ছুড়ে...
ধুপের তাওয়ায় তপ্ত আরতি নাচছে শাকিরা।
আঁধার কাটবে, ঝুমকা জবায় পাপড়ি ঝিরিঝিরি
মহিষ তাড়াতে...
সিংহের লড়াই শুরু তবু সাইবারে গেম বিচ্ছিরি।
জায়া লক্ষ্মী-সরস্বতী বোন, মোহিনী বীণায় বাজে
ভাদুই মাল্লারে গায়...
মা তোর জঠরে আশ্রয় খুঁজে পাওয়া এসরাজে।
আমরা অতসী, আমরা খুশির উত্তেজনায়
অপরাজিতা অঞ্জলি তো, মায়ের মুখেই মানায়...
বেসিনের সিরামিকে সাদা পাণ্ডুলিপি
হেসে হেসে ট্যাপকলের জল ঝরে
বেসিনের সিরামিকে সাদা পাণ্ডুলিপি ভিজিয়ে ফেললে;
কামিজের ছিটেফোটা বিবর্ণতা-
মুছে ফেলা যায়...
বিমূঢ়তা আগোচরে থাকে ;
দীর্ঘশ্বাসে বুকের মাছিরা গুনগুনিয়ে ডাকলে
জিয়নকাঠির ছোঁয়ায় মুচড়ে ওঠে হৃদয়ের মূর্তি
হাতেগড়া প্রতিমাও প্রার্থনায় নতমুখ
কৌতূহলে-ক্ষমার অযোগ্য পাপ বলে-
খুলে বললে সবই...
পদ্ম-গোক্ষুর সাপের কামড়ে
ভ্রমরের বিষ পর্যন্ত নামিয়েছিলে পুকুরের জলে...
ইস্পাতের আয়ু
দুধ রান্নায় হলুদ রঙের ডেকচি ভরে ওঠে
গ্রিলে মরচে ধরার রহস্য দেখেই-
বোঝা যায় ইস্পাতের আয়ু।
গল্পে না হয়; ঘটনা সাজানো নিসর্গ !
সূর্যাস্তের মিঁউমিঁউ আলো
বসন্ত...নিশ্বাস নিতে আসে...
টিভি মেরামতের তুখোড় মিস্ত্রীদের
মশানিধন কাজর প্রযুুক্তি প্রয়োজন;
কর্পোরেশন কর্মীদের বাড়তি চাপ নেই
নগর জায়গা ঘিরে ধরে
কিছু ট্যাক্স বিলের বাড়তি প্রশাখা নুইয়ে
পড়ে আছে-
যেখানে ঝরছে আবর্জনার স্তুপ-পালক পুচ্ছ !
মশারি-চাঁদর বিছানায় নরম তোষক...
মাইক্রোওয়েভ রান্নাঘর
ডোবা থেকে তুললে সে মাটিতে লুকানো
থাকে ফুলের সুবাস...
আঙিনায় ঘাসের উর্বরা নিয়ে
বেশ কিছু উদ্ভিদ চর্চার কথা: বেলচা-কোদাল-কাস্তে
ছন্দের নিবিড়ে সামান্য আলো যে নিয়মিত গাছের খাদ্যের
রুটি-তরকারী মাইক্রোওয়েভ রান্না ঘরের উষ্ণতা ফিরে গিয়ে
বিকেল হলেই বাড়ে-কমে !
দরজার মাপেই হয়তো ফনিমনসার গায়ে
এতো তীক্ষ্ম কাঁটা-
ক্ষোভে ক্ষিপ্ত হয়ে আছে।
টবের বাইরে খুব বর্ষাকাল জেনে গুছিয়ে রাখবে
পোষাকের আলমারি ভরা
নেপথোলিনের ঘ্রাণ...
ভেজা পরিচ্ছদ যতটা ছড়াবে
বিকেলের রৌদ্র অতোটা বিপ্লবী নয়,
গাঢ়লাল জবা-পুকুরের জল...
খালের জোয়ারে বয়ে যাচ্ছে রক্তাভ হিজল
জালনার এতো কাছে !
তবু-ফুল দেখি না,
দেখি! রক্তের জোয়ার বয়ে যাচ্ছে
ছটফটে স্রোতে...
যে ঘরের দেয়ালে ক্রুশবিদ্ধ যিশুর মূর্তি
টাঙিয়ে রেখেছি;
আমাদের আলিঙ্গনে ভেজা
পরিচ্ছদ কতোটা শুকাবে প্রার্থনায় জপে ?
মনিকাঞ্চন ফুলের গন্ধ যতটা ছড়াবে
সুপারি গাছের চিরল পাতায় বিছেপোকা সুরসুরে হেঁটে যায়
ভিজে হাওয়া জানলায় এসে
উঁকি দেয়....
রূপকথা...
কবি : জীবনানন্দ গবেষক, বরিশাল।
No comments:
Post a Comment