Thursday, February 28, 2019

ভাবের পাগল ‘ভবা পাগলা’ : পার্থ প্রতিম নাথ


‘ভবা পাগলার’ আসল নাম ‘ভবেন্দ্র মোহন সাহা’। তাঁর জন্ম আনুমানিক ১৮৯৭ খৃস্টাব্দে। তাঁর পিতার নাম ‘গজেন্দ্র কুমার সাহা’। ভবা পাগলারা ছিলেন তিন ভাই এক বোন। তিনি দেখতে ছিলেন একরকম হালকা পাতলা গড়ন, গায়ের রঙ উজ্জ্বল শ্যামবর্ণ, মাথায় ঝাঁকড়া চুল, চিবুকে এক গোছা দাঁড়ী। গানের ভণিতায় তিনি নিজেকে ভবা বা ভবেণ বলে উল্লেখ করেছেন। মানিকগঞ্জ অঞ্চলে তিনি ভবা পাগলা নামে খ্যাত। তাঁর গান মুহাম্মদ মনসুর উদ্দিন ও অধ্যাপক উপেন্দ্রনাথ ভট্টাচার্যের দৃষ্টি আকর্ষণ করে ছিল অনেক আগেই। অধ্যাপক উপেন্দ্রনাথ ভট্টাচার্য ‘বাংলার বাউল ও বাউল গানে’ তাঁর দুটি গান ছেপেছিলেন। মুহাম্মদ মনসুর উদ্দিন ‘হারামণির সপ্তম খণ্ডে’ ভবা পাগলা সম্পর্কে লিখেছেন, ভবা পাগলা এক জন নামকরা বাউল গান রচয়িতা। তিনি সাটুরিয়া থানার (বর্তমানে উপজেলা) অন্তর্গত আমতা গ্রামের অধিবাসী ছিলেন। স্বাধীনতার পর (অর্থাৎ ১৯৪৭ এর পর ১৯৫১) তিনি বাংলাদেশ ত্যাগ করে ভারতে চলে যান। তাঁর গান মানিকগঞ্জ জেলা সহ বাংলাদেশ ও ভারতে বিভিন্ন স্থানে পরিচিতি লাভ করে ও গীত হয়ে আসছে। তিনি মূলত শ্যামা সঙ্গীত, ভাব গান, গুরুতত্ত্বের গান, দেহতত্ত্বের গান, ও সৃষ্টিতত্ত্বের গান রচনা এবং সুর নিজেই করেছেন। তিনি ১৯৪৭-এ ভারতে চলে যান এবং বর্ধমানে কালনাতে অবস্থান করতেন। ভবা পাগলা ১৯৮৪ খৃস্টাব্দে দেহ ত্যাগ করেন।
ভবা পাগলা প্রতিষ্ঠিত ভবানী মন্দিরের বাৎসরিক উৎসব হয় বৈশাখের শেষ শনিবার। কালনা শহরের জাপট এলাকায় অবস্থিত এই মন্দিরে উৎসব উপলক্ষে দেশের নানা প্রান্ত থেকে বহু মানুষ আসেন। দেখা মেলে বিদেশীদেরও। মন্দির প্রাঙ্গণে বসে মেলার আসর। মন্দির প্রতিষ্ঠা করার পরেই বৈশাখের শেষ শনিবার বিশেষ উৎসব শুরু করেছিলেন ভবা পাগলা। তারপর থেকে প্রতি বছরই বৈশাখ মাসের শেষ শনিবার এই উৎসব অনুষ্ঠিত হয় এই মন্দিরে। স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, ১৯৫১ সালে বাংলাদেশ থেকে জাপট গ্রামে এসে ভবানী মন্দির তৈরি করেছিলেন ভবা পাগলা। শুধু সাধন-ভজনই নয়, এই মন্দির ছিল তাঁর সাহিত্য চর্চার জায়গাও। এই মন্দিরে বসেই তিনি অনেকগুলি গান ও কবিতা লেখেন। তাঁর ভক্তদের দাবি, এখনও পর্যন্ত ভবা পাগলার ২৫ হাজার গানের অস্তিত্ব পাওয়া গিয়েছে। প্রতি বছরই উৎসবের আগেই দেশের নানা প্রান্ত থেকে সাধু-সন্তরা আসতে শুরু করেন। কোন বারই তার ব্যতিক্রম হয়নি। মন্দির প্রাঙ্গনেই তাঁদের থাকার ব্যবস্থা করা হয়েছিল। এসেছিল বাউল, কবিয়াল ও কীর্তনের দল। মন্দির সংলগ্ন মঞ্চে বসে শিল্পীরা ভবা পাগলার গান শোনান, হয় ধর্মসভা। ভক্তদের হাতে তুলে দেওয়া হয় প্রসাদ। বর্তমানে মন্দির ও উৎসবের দেখভালের দায়িত্বে রয়েছেন সাধক কবির নাতিরা। 


 







-
---- তাঁর লেখাা একটি গান ------
-
নদী ভরা ঢেউ বোঝ না তো কেউ
কেন মায়ার তরী বাও বাও গো
ভরসা করি এ ভব কাণ্ডারী
অবেলার বেলা পানে চাও চাও রে .....
বাইতে জান না কেন ধর হাল
মন মাঝিটা তোর হল রে মাতাল
বুঝিয়া বলো তারে
যেতে হবে পারে
হালটি ছাড়িয়া এখন দাও দাও রে .....
বাইতে ছিল তরী পাগলা ভবা
ভাঙা তরী জলে জলে ডুবা ডুবা ..
চুবানি খেয়ে ধরেছে পায়ে
ওরে কাণ্ডারি এখন বাঁচাও বাঁচাও রে .............


Monday, February 18, 2019

আমাদের স্পর্ধা, মা ফেরদৌসি প্রিয়ভাষিণী : লুৎফুল কবির রনী

যুদ্ধ শেষ হয়েছে। স্বাধীন হয়েছে গোটা একটি দেশ। অনেক প্রাণ আর সম্মানের বিনিময়ে কেনা এই স্বাধীন দেশে পুরস্কৃত হয়েছেন অনেক বীর যোদ্ধা। কেউ বা ইতিহাসের অতলে হারিয়ে গেছেন। কেউ মনে রাখেনি তাদের। কিন্তু যে বিশাল সংখ্যক নারী যুদ্ধ শেষেও নিজের সাথে যুদ্ধ করে গেছেন, নিজের পরিবার, সমাজের ভয়ে সেই অন্ধকার দিনগুলোর কথা মুখ ফুটে কাউকে বলতে পারেননি, তাদের যুদ্ধটা কিন্তু একেবারেই ভিন্ন ছিল। মুক্তিযুদ্ধের পর তখন পার হয়ে গেছে প্রায় ২৮ বছর। প্রতিনিয়ত মানসিক যন্ত্রণার ভেতর দিয়ে পার হয়েও প্রথম যে নারী বলিষ্ঠ কণ্ঠে একাত্তরের সেই অন্ধকার দিনগুলোর কথা জনসমক্ষে বলেছিলেন, তিনি ফেরদৌসী প্রিয়ভাষিণী। তিনি শুধু একজন মুক্তিসেনাই নন, বিখ্যাত ভাস্করও। ২৮ বছর তো অনেকটা সময়। এতদিন পরে কেন জানালেন? এই প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন,
“২৮ বছর পালাতে পালাতে নিজেকে সমাজ থেকে প্রত্যাখ্যান করলাম। কেন জানি না মনে হলো, যে দেশে মুক্তিযুদ্ধের এত বড় সাক্ষী ও নির্যাতন সহ্য করার পরও সমাজ আমার দিকে তর্জনি উঠিয়ে অপমানিত করে, লাঞ্ছিত করে সে সমাজের আমার আর প্রয়োজন রইল না। তারপর আমি চিন্তা করলাম আমি নিজে কতটুকু দায়ী, তখন সেই পরিণত বয়সটাও আমার ছিল না। যখন একটা পরিণত বয়স হলো, আমি বুঝতে পারলাম এ বিষয়ে এক বিন্দু পরিমাণ অপরাধ আমার ছিল না। নিজের সাথে বোঝাপড়া করে যখন পুরো মাত্রায় আস্থাশীল হলাম আমার নিজের প্রতি, তখনই বলার সিদ্ধান্ত নিই, এদেশের নতুন প্রজন্মকে মুক্তিযুদ্ধ সম্পর্কে জানাতে।”



একাত্তরের ভয়াবহ ধর্ষণ সম্পর্কে একমাত্র জবানবন্দি-দানকারী ফেরদৌসী প্রিয়ভাষিণী শাহরিয়ার কবিরের সম্পাদনায় ‘একাত্তরের দুঃসহ স্মৃতি’ বইতে তার সাক্ষাৎকারে বলেছেন, ‘রাতে ফিদাইর (উচ্চ পদস্থ পাকিস্তানি সেনা কর্মকর্তা) চিঠি নিয়ে ক্যাপ্টেন সুলতান, লে. কোরবান আর বেঙ্গল ট্রেডার্সও অবাঙালি মালিক ইউসুফ এরা আমাকে যশোরে নিয়ে যায়। যাওয়ার পথে গাড়ির ভেতরে তারা আমাকে ধর্ষণ করেছে। নির্মম, নৃশংস নির্যাতনের পর এক পর্যায়ে আমার বোধশক্তি লোপ পায়। ২৮ ঘণ্টা চেতনাহীন ছিলাম।’
১৯৭১ সালে পাকিস্তানী হানাদার বাহিনীর বর্বর নির্যাতনের শিকার হন ফেরদৌসী প্রিয়ভাষিণী। একমাত্র তিনিই সেই সব সবার সামনে তুলে মুখ ফুটে বলেছেন। বিভিন্ন সাক্ষাৎকার থেকে জানা যায়, তার ধারণা ছিলো, তার অকপট বক্তব্য শুনে আরো অনেকে এগিয়ে আসবে। বাস্তবে আসলে তা দেখা যায়নি। পরবর্তীকালে খুব কম সংখ্যক নারী একাত্তরের ভয়াবহতা তুলে ধরার সাহস করতে পেরেছিলেন।
দীর্ঘ সময় একাই পথ পাড়ি দেন ফেরদৌসী প্রিয়ভাষিণী। মা প্রগতিশীল এবং ভাই মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণ করলেও যুদ্ধ থেকে ফিরে অনেকটাই একা হয়ে পড়েন তিনি। তবে নিজের দেয়া সাক্ষাৎকারে বারবরই বলেছেন, সেই সময়ের চূড়ান্ত অপমানই তার চলার পথে পাথেয় হয়েছে।
সমাজ, পরিবার আর নিজের সাথে লড়তে লড়তে যখন বিষণ্ণ, ক্লান্ত হয়ে পড়তেন, তার মন খুলে দিতেন প্রকৃতিকে। গাছের গুড়ি, বাঁশ, নষ্ট হতে থাকা কাঠে তিনি তার কষ্টগুলো তুলে রাখতেন। তিনি বলতেন, এই কষ্টগুলো তিনি সবসময় ইতিবাচকভাবে নিয়েছেন। সাজানো সব স্মৃতি আর কষ্ট কাঠের উপর হয়ে উঠত শিল্প। এসব কিছুই ছিল তার নিজের জন্য। প্রদর্শন বা খ্যাতির ধার ধারেননি কখনো। তার এই শিল্প আবিষ্কার করেন এস এম সুলতান। জাতির কাছে তিনি ভাস্কর ফেরদৌসী প্রিয়ভাষিণীর পরিচয় দেন। যশোর শিল্পকলা একাডেমিতে প্রথম প্রদর্শনীর মাধ্যমে শুরু হয় তার যাত্রা। প্রিয়ভাষিণী বলেন,
“সবচেয়ে বড় অনুপ্রেরণা প্রকৃতি থেকে পেলেও সবসময় একজনের অনুপ্রেরণা মাথায় করে রাখি, তিনি হলেন শিল্পী এস এম সুলতান।”
'এক জীবনে চোখের সামনে এত এত মৃত্যু, হত্যা, নির্যাতন দেখেছি যে এখন আর কোনো কষ্টই আমাকে নাড়া দেয় না। আমার চোখের সামনে আমার বাবা আমার মাকে নির্যাতন করতেন। তার ভয়ে আমরা কাবু হয়ে থাকতাম। আমার প্রথম স্বামীর হাতেও আমি নির্যাতিত হয়েছি। বাবা-মা আলাদা হয়ে গেলেন চোখের সামনে। তারা আলাদা সংসার করলেন। ’৭১ এর সময় আমার স্বামী আমাকে ছেড়ে চলে গেল। আমি একা হয়ে গেলাম। আমার থাকার জায়গা ছিল না কোথাও। মানুষের বাসায় আশ্রয় নিয়েছি। তিনবেলা খেতে পারিনি। এক জীবনের কষ্টের কথা বলে শেষ করা যাবে না। যত কষ্টতেই থাকি না কেন, আমি আমার শিল্পসত্তাকে মেরে ফেলিনি।
বিজয় দেখেছি আমি৷ যুদ্ধের নয়টি মাস যে কেমন সেটা আমি কখনই ভুলতে পারি না৷ আমি বুঝে পাই না যে যুদ্ধ হবে সেনাবাহিনীর সাথে সেনাবিহিনীর৷ কিন্তু এই সাধারণ বেসামরিক মানুষের উপর যে পাকিস্তানি বাহিনীর ন্যাক্কারজনক আচরণ এবং আক্রমণ, সেটা কেন? চোখের সামনে নারকীয় দৃশ্য৷ এখানে সেখানে মা-বোনদের ধর্ষণ৷ কখনো গণধর্ষণ৷ নির্যাতনের শিকার নারীদের আর্তচিৎকার৷ আলোহীন প্রকোষ্ঠে প্রতিনিয়ত কতোগুলো অসহায় নারীর মৃত্যুর সঙ্গে পাঞ্জা লড়া৷ হত্যাসহ সাধারণ মানুষের বাড়িঘরে আগুন দিয়ে ধ্বংস করে দেওয়া এসব কিছুই দেখেছি আমি৷ এ যেন সভ্য পৃথিবীর বাইরের অন্য কোনো জগত৷''
কথাগুলো বললেন একাত্তরে পাক সেনাদের নির্যাতনের শিকার ভাস্কর ফেরদৌসী প্রিয়ভাষিণী৷
ফেলে দেওয়া, ফুরিয়ে যাওয়া কাঠের টুকরা, শেকড়, গাছের গুড়িকে তুলে এনে শিল্পকর্মে ফুটিয়ে তোলেন তাঁর আবিষ্কার।
একাত্তরের নির্মম ইতিহাসের প্রত্যক্ষ সাক্ষী তিনি, মুক্তিযুদ্ধ তাঁর জীবনের বড় অহংকার। তিনি একজন মুক্তিযোদ্ধা।
১৯৭১ সালে এদেশের লক্ষ লক্ষ মেয়ের মতো তিনিও পাক হানাদার বাহিনীর নির্যাতনের শিকার হন। মুক্তিযুদ্ধ নয় মাসে শেষ হলেও তাঁর সংগ্রাম শেষ হয়নি।
১৯৪৭ সালের ১৯শে ফেব্রুয়ারি খুলনা শহরে নানার বাড়িতে জন্মগ্রহণ করেন ফেরদৌসী প্রিয়ভাষিণী। সেই বাড়ির নাম ছিল 'ফেয়ারী কুইন' বা 'পরীর রাণী'।
প্রিয়ভাষিণীর ব্যক্তি ও শিল্পী জীবনে নানা বাড়ির প্রভাব অপরিসীম। এই নানা বাড়িতেই কেটেছে তাঁর শৈশব-কৈশোরের দিনগুলো।
এখানেই প্রকৃতির সাথে মিলে-মিশে একাত্ম হবার প্রথম সুযোগ ঘটে তাঁর। খুব ছোট বেলা থেকেই অনেক বিখ্যাত মানুষের সান্নিধ্যে আসতে পেরেছিলেন তিনি।
পাক বাহিনীর পরাজয়ের শেষ পর্যায়ে প্রিয়ভাষিণীকে হত্যা করার জন্য তাঁর বাড়িতে হানা দেয় পাক সেনারা৷ তবে সৌভাগ্যক্রমে কীভাবে অল্পের জন্য প্রাণে বেঁচে যান তা জানালেন এই সংগ্রামী মুক্তিযোদ্ধা৷ তাঁর ভাষায়, ‘‘ঠিক এক-দেড় মিনিটের ব্যবধানে ঘর থেকে আমি বের হয়েছিলাম বলেই রক্ষা পেয়েছিলাম সেদিন৷ আর আমার ঘরে আমাকে না পেয়ে অন্য যে লোক ছিল তাকেই সেখানে হত্যা করে পাক সেনারা৷''
১৯৭২ থেকে ১৯৭৭ সাল পর্যন্ত এই ছয় বছর প্রিয়ভাষিণী একজন গৃহবধূ হিসেবেই জীবন-যাপন করেছেন৷ ১৯৭৭ সাল থেকে ১৯৯৮ পর্যন্ত তিনি একটানা কাজ করে গেছেন৷ টেলিফোন অপারেটর হিসেবে যেমন কারখানায় কাজ করেছেন, তেমনি ইইউএনডিপি, ইউনিসেফ, এফএও, ক্যানাডিয়ান দূতাবাস প্রভৃতি অনেক বড় বড় প্রতিষ্ঠানেও কাজ করেছেন৷ শেষ বয়সে এসে নানা শিল্পকর্ম সৃষ্টিতে মনোনিবেশ করেন এবং তা অবিরামভাবে অব্যাহত রেখেছেন৷
ফেরদৌসীর সবচেয়ে বড় ব্যাপার ছিল জীবনের প্রতি তাঁর প্রগাঢ় ভালোবাসা। জীবনকে যে সে কী ভালোবাসত, এই একজীবনে সে-ভালোবাসা শেষ হয় না। দেশের প্রতি, মানুষের প্রতি, প্রকৃতির প্রতি, শিল্পের প্রতি,সুন্দরের প্রতি, এমনকি নিজের সংসারের প্রতি ছিল তাঁর গভীর ভালোবাসা আর মমতা। ভালোবাসত সাজতে, সাজাতে। পথের ধুলো থেকে কুড়িয়ে এনে কোনো আশ্চর্য জাদুতে বদলে দিত একেকটি তুচ্ছ উপকরণকে, রূপ দিত অনন্যসাধারণ শিল্পে। তাঁর গভীর জীবনবোধ, অভিজ্ঞতা তাঁকে শিখিয়েছে হার না মেনে শিল্পের ভুবনে নিজের আসনখানি প্রতিষ্ঠিত করতে।
প্রিয়ভাষিণী যেভাবে ফেলে দেওয়া, ফুরিয়ে যাওয়া কাঠের টুকরা, শিকড়, গাছের গুঁড়িকে তুলে এনে নতুন জীবন দিচ্ছেন তা অসাধারণ৷ এটা তাঁর নিজের জীবনের সাথে মিলে যায়৷ কারণ যুদ্ধের সময় তিনি পাক সেনাদের অত্যাচারে প্রায় ফুরিয়েই যেতে বসেছিলেন কিন্তু সেখান থেকে তিনি আবার উঠে দাঁড়িয়েছেন৷ তিনি নীরবে-নিভৃতে কাজের মাধ্যমে বাঙালির অধিকার প্রতিষ্ঠায় ভূমিকা পালন করে গেছেন শেষ দিন পর্যন্ত৷
এই সাহসী বীর মুক্তিযোদ্ধার জীবনী যত বার পড়ি, একজন নারীর কষ্ট, অপমানের কথা অনুভব করে আমার বুক ভেঙে যায়, তবু আমি উজ্জিবিত হই! তাঁর ভেঙে না পড়ার উদ্যোম, তাঁর সাহসে, তাঁর শিল্পীমনে আমি মন্ত্রমুগ্ধ হই....
তিনি আমাদের লাল সবুজ।
আমাদের স্পর্ধা, মা ফেরদৌসি প্রিয়ভাষিণী।
আজ মায়ের জন্মদিন
 ১৯ ফেব্রুয়ারি ২০১৯

লেখক: ব্লগার ও প্রাবন্ধিক

জয়দেব মুখোপাধ্যায় : চৈতন্য মৃত্যুরহস্যের কিনারা করতে গিয়ে প্রাণ দিয়েছিলেন যে গবেষক

জয়দেব মুখোপাধ্যায়ের যেন এক কিংবদন্তির নাম যার কথা অনেকেই শুনেছে , বহু মানুষই তাকে খুঁজে ফেরে কিন্ত তার ব্যাপারে বিশদে কেউ কিছু বলতে পারেনা...